বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ডিসিদের দায়িত্ব দেওয়ার পর পুলিশের মৃত সদস্যদের অনুদান পেতে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়েছে। ২০২০ সালে কর্তব্যরত অবস্থায় মারা যাওয়া ২৯৮ সদস্যের পরিবার এখনও টাকা পায়নি। সব পেন্ডিং হয়ে আছে। এই দায়িত্ব যদি পুলিশ সুপারদের দেয়া হয় তাহলে এই সমন্বয়হীনতা থাকবে না। মৃত পুলিশ সদস্যদের অসহায় পরিবারগুলোর অনেক উপকার হবে।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) দুপুরে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ উপলক্ষে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজ (পিএসসি) কনভেনশন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের এ সব কথা বলেন।
আইজিপি স্বরাষ্ট্র সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমাদের জুনিয়র কোনো সদস্য যখন দায়িত্বরত অবস্থায় মারা যায় তখন পুরো পরিবার অথৈ সমুদ্রে নিক্ষিপ্ত হয়। জেলা প্রশাসকরা অনেক ব্যস্ত থাকেন। তাই দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে এবং অনিশ্চয়তা কাটাতে উদ্যোগী হবে মন্ত্রণালয় এমনটা আশা করেন বলে জানান আইজিপি।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘শান্তিকালীন সময়ে যারা দুষ্কৃতিকারী, জনগণ, সমাজ, রাষ্ট্র ধ্বংসের জন্য লিপ্ত হয় তাদের বিরুদ্ধেই পুলিশই ক্রমাগত যুদ্ধে লিপ্ত থাকে। এই যুদ্ধ সন্ত্রাসী, অপরাধী, জঙ্গি, গ্যাং, চোর-ডাকাতদের বিরুদ্ধে। যারা শান্তিভঙ্গ কিংবা বিনষ্ট করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধ থাকলে মৃত্যু অনিবার্য। আমরা শান্তিকালীন সময়ে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছি দেশ, জনগণ, সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা, নিরাপত্তার জন্য। এজন্য আত্মত্যাগ করছে পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ লাইন ডিউটিতে প্রাণ হারায়। প্রতিবছর শত শত সহকর্মীকে হারাই কর্তব্যরত অবস্থায়। ৩৪৬ জন পুলিশ সদস্যকে হারিয়েছি গত বছর। এরমধ্যে শুধু করোনার দুই বছরে আমরা ১০৬ জন পুলিশ সদস্যকে হারিয়েছি। আজ ১৩৮ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হচ্ছে।’
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রফেশনাল, জব সেফটি, সেফটি ইনভারমেন্ট আরও ভালো করার চেষ্টা করছি। যারা অসুস্থ হন তাদের আর্থিকভাবে সহায়তা করে থাকি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদেই পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের যাত্রা শুরু হয়। তিনি ৫ কোটি টাকার চেক দিয়ে এর যাত্রা শুরু করেছেন।’
আইজিপি বলেন, ‘গত দুই বছরে সবার সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতালে পরিণত হয়েছে আমাদের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরও বেশি সহযোগিতা সাপোর্ট প্রত্যাশা করছি।’
পুলিশ বহুমুখী দায়িত্ব পালন করে। রাষ্ট্র ব্যবস্থার যে উন্নতি তাতে শিল্পায়ন নগরায়ন হচ্ছে। আর্থিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে৷ যৌথ পরিবার ভেঙ্গে যাচ্ছে। পাশাপাশি ফ্ল্যাটে থাকছে বছরের পর বছর কিন্তু কেউ কাউকে চেনে না। মানুষ একা হয়ে পড়ছে৷ সেকারণেই বর্তমান অবস্থার মধ্যে এমন কোনো ক্ষেত্র নাই যেটা পুলিশের দায়িত্বের বাইরে।
পাঁচটা মন্ত্রণালয় আমরা সিলেক্ট করেছি, যারা আমরা এক সঙ্গে কাজ করতে পারি। রাষ্ট্র উপকৃত হবে। যদিও কারো কারো চক্ষুশূলের কারণ হচ্ছি। গ্রাম পর্যায়ে পুলিশিং এর সঙ্গে উন্নয়নের কাজে অংশ নিতে পারি।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আখতার হোসেনসহ অনেক কর্মকর্তারা।