প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনকে ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের হামলার সঙ্গে তুলনা করেছেন মার্কিন রাজনীতিবিদ ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।
সে সময় আমেরিকা যেভাবে অস্ত্র দিয়ে আফগানিস্তানের মুজাহিদিন যোদ্ধাদের সহায়তা করেছিল, সেভাবে কিয়েভকেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অস্ত্র সহায়তা দিলে একই ধরনের ফল পাওয়া যাবে বলে মন্তব্য করছেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার (১ মার্চ) রুশ সংবাদ মাধ্যম আরটি জানায়, মার্কিন টেলিভিশন এমএসএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হিলারি ক্লিনটন এ মন্তব্য করেছেন।
আফগানিস্তানে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের হামলার কথা স্মরণ করিয়ে হিলারি বলেন, সুসংগঠিত ও স্বতঃপ্রণোদিত প্রতিরোধের ফলে রাশিয়ানরা আফগানিস্তান ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। আফগান যুদ্ধের সমাপ্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্য সুখকর হয়নি। তবে ওই যুদ্ধ আফগানিস্তানে আল-কায়েদার উত্থান ঘটায়, যারা ৯-১১-এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হামলার জন্য দায়ী।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী এবং বেসামরিক যোদ্ধা উভয়কেই অস্ত্র সরবরাহ করা উচিৎ বলে মনে করেন হিলারি ক্লিনটন। তিনি বলেন, ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলোর সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র দেওয়া যেতে পারে। এটা ঠিক যে, রাশিয়ার সামরিক শক্তি অপ্রতিরোধ্য, কিন্তু আফগানিস্তানে হামলার সময়ও তারা অপ্রতিরোধ্যই ছিল। যথেষ্ট শক্তিশালী বিমানবাহিনী নিয়েও সিরিয়ায় সরকারবিরোধীদের পরাজিত করতে বছরের পর বছর সময় লেগেছে।
১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরের শেষে আফগানিস্তানে হামলা করেছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। আফগানিস্তানের কমিউনিস্ট সরকারের সহযোগিতায় কমিউনিস্টবিরোধী মুসলিম গেরিলাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ায় পরাক্রমশালী দেশটি। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর অপারেশন সাইক্লোন প্রোগ্রামের আওতায় ১৯৮০-র দশকে আফগানিস্তানে ইসলামপন্থী যোদ্ধাদের বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছিল।
এদিকে, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ওএইচসিএইচআর-এর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা আল-জাজিরা জানিয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু পর ইতোমধ্যে ১৩৬ বেসামরিক মানুষ মারা গেছে। এরমধ্যে ১৩ শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন চার শতাধিক মানুষ। তবে আল-জাজিরা হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।