বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য ইউক্রেনের অবরুদ্ধ বন্দর শহর মারিউপোলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে রাশিয়া।
বুধবার (৩০ মার্চ) এ ঘোষণা দেয় দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, মারিউপোল থেকে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত বারদিয়ানস্ক বন্দর হয়ে জাপোরিঝিয়া পর্যন্ত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা) একটি মানবিক করিডোর খোলা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই মানবিক কর্মকাণ্ড সফল করতে আমরা জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ও রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির সরাসরি অংশগ্রহণে এটি পরিচালনার প্রস্তাব করছি।
কিয়েভকে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টার আগে (বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা) রাশিয়া, ইউএনএইচসিআর ও আইসিআরসিকে লিখিতভাবে যুদ্ধবিরতির জন্য `নিঃশর্ত সম্মান’ জানাতে বলেছে রুশ মন্ত্রণালয়।
এ ছাড়া ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে নির্ধারিত করিডোর দিয়ে বাস বহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে বলেছে মস্কো।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ২০০৮ সাল থেকে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত, এ নিয়েই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তবে সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো। কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। ঠিক তার দুদিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।
এ দিকে চলমান এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ৩৯ লাখ মানুষ। যুদ্ধে ইউক্রেনের ১৩শ’ সেনা এবং রাশিয়ার ১৬ হাজার ৪০০ সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে তাদের ১ হাজার ৩৫১ সেনা নিহত এবং ইউক্রেনের আড়াই হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ অভিযানে ইউক্রেনের এক হাজার ৮০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
সূত্র : এএফপি