তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মুখে শ্রীলঙ্কায় চলমান জনবিক্ষোভের মধ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার (১ এপ্রিল) রাতে দেশটির রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশব্যাপী এ জরুরি অবস্থার ঘোষণা দেন। খবর রয়টার্সের।
জরুরি অবস্থা জারি নিয়ে গোতাবায়ে রাজাপকসে বলেছেন, জননিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ এবং জরুরি সেবা ঠিক রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অশান্তির আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।
গত কয়েক মাস ধরে রিজার্ভ সংকটের কারণে শ্রীলঙ্কায় পণ্য আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। এতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে লাগামহীনভাবে। ব্যাপক জ্বালানি সংকটের মধ্যে চুলা জ্বালানোর কেরোসিন নিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
তেল সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় দৈনিক ১৩ ঘণ্টারও বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। কাগজ না থাকায় স্কুলগুলোতে পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ব্যাহত হচ্ছে দৈনিক পত্রিকা ছাপানো।
এর আগে দেশটিতে অর্থনীতি ধসে পড়ার জন্য সরকারকে দায়ী করে বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাতে কলম্বোর মিরিহানায় প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের বাসভবনের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করে কয়েকশ মানুষ। এতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের।
টিয়ার শেল ও জলকামান ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৫০ জন। বিক্ষোভের ঘটনায় ৪৫ জনকে আটক করা হয়। রাতেই কলম্বো উত্তর, দক্ষিণ, কলম্বো সেন্ট্রাল, নুগেগোদা, মাউন্ট লাভিনিয়া এবং কেলানিয়ায় কারফিউ জারি করা হয়।
পরে শহরগুলো থেকে কারফিউ তুলে নেয় সরকার। শুক্রবার (১ এপ্রিল) ভোর ৫টায় কারফিউ প্রত্যাহার করা হয় বলে কলম্বো পুলিশের মুখপাত্র এসএসপি নিহাল থালডুয়ার নিশ্চিত করেন।
গত মাসে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল দুই দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার। তাছাড়া জুলাইয়ে বন্ড পরিশোধে ব্যয় হয় এক বিলিয়ন ডলার। শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা বলছেন, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি দেশটির অর্থনীতি।