চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন পুরোপুরি না নিভলেও এখন নিয়ন্ত্রণে আছ। একই সঙ্গে বিএম ডিপোকে ঝুঁকিমুক্ত বলেও ঘোষণা দেয়া হয়। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় দুর্ঘটনাস্থলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল বলেন, ঘটনার পর থেকে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তবে ডিপোতে কি পরিমাণ কেমিক্যাল ছিল তার কোনো তথ্য না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের আনতে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। কারণ আমরা চেষ্টা করেছি যাতে নতুন করে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটে। ডিপোতে আর কোনো বিষ্ফোরক আছে কি না তা নিয়েও সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে।
তিনি বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও এখনো পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। ১৮-২০টি কনটেইনার থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি বিএম ডিপোতে দায়িত্ব পালন করছে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।
এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, কনটেইনারে রাসায়নিক পদার্থ থাকায় ডিপোর ভেতরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সেনাবাহিনী। আগুন নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের আশঙ্কা, ফের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। তাই খুবই সতর্কতা ও সুপরিকল্পিতভাবে আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
এ সময় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার বলেন, আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদও বিএম কনটেইনার ডিপোর কিছু কনটেইনার থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি আগুন নিভাতে। তবে কোন কনটেইনারে কি পরিমাণ রাসায়নিক আছে তা বলতে না পারায় আমাদের সাবধানতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে। তারপরও আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর এলাকার বিএম কনটেইনারে গত শনিবার রাত ৯টায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৪১ জন নিহত এবং তিন শতাধিক আহত হন। নিহতদের মধ্যে ১৬ জনের মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। গতকাল সোমবার ডিএনএ টেস্টের জন্য অজ্ঞাতদের স্বজনদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। অন্যদিকে এ ঘটনায় আহত হয়ে ইতোমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিযেছেন ১৫৫ জন। বর্তমানে ভর্তি আছেন ৬৭ জন। এর মধ্যে বার্ন ইউনিটে ২৯ জন, নিউরো সার্জারি বিভাগে ২ জন, অর্থোপেডিক বিভাগে ৯ জন, সার্জারি বিভাগে ১১ জন, চক্ষু বিভাগে ১৩ জন এবং নাক কান গলা, মেডিসিন বিভাগ ও ইউরোলজি বিভাগে একজন করে ভর্তি আছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন ৭৫ জন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে ৫ জনকে। ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসায় চিকিৎসক ও নার্সরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।