(ফলোআপ)
দেশের সর্বত্র অবৈধভাবে নদী,খাল দখল করে বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক ভবন, দোকানপাট,প্রতিষ্ঠান তৈরি করে ভূমিদস্যুরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের আন্তরিকতা ও পরিবেশবাদীদের আন্দোলন এবং উচ্চ আদালতে এক রিটের পর যুগান্তকারী রায়ের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসে ভূমিদস্যুদের নাম-তালিকা। সেই তালিকায় স্থান পায় দেশের বড় ছোট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
নদী খাল দখলদারদের সাভার উপজেলার অবৈধ তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঢাকা জেলার অদূরে
সাভার উপজেলার নন্দাখালী মৌজাতে ১ নম্বর খতিয়ানের ৪ নম্বর দাগে জমি দখল করে রেখেছে ভূমিদস্যু চক্রের মূল হোতা কাজল।২০১৯ সালের ১৫ জুলাইতে করা সাভার উপজেলা ভূমি অফিসের রিপোর্ট অনুযায়ী এই তালিকা করা হয়। সেখানে বলা হয় ‘রিভার ভিউ পার্ক’ নামের সিঙ্গার ব্রিজের পূর্বপাশ,ব্রিজের দক্ষিণ পাশের জমি তারা অবৈধভাবে দখল করেছে।
স্মারক নম্বর ০৫.৪১.২৬৭২.০২.৫৩.০০১.১৯- ৯৪৯ এর ওই চিঠিতে কাজলকে জমির মালিক ও অবৈধভাবে দখলদার হিসেবে চিন্হিত করে উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস কতৃপক্ষ।
২০১৯ সালের অবৈধ দখলবাজির তালিকায় যুক্ত হবার পর বছর দুই বন্ধ থাকলেও হঠাৎ মাস ছয় যাবৎ পুরোদমে নতুন করে দখল করা জমিতে নিজেদের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন ভুমিদস্যুরা।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,দখল করা অবৈধভাবে জমির উপর তিনতলা করা দালানের নতুন করে সংস্কার কাজ ও রেস্টুরেন্টের কাজ চলছে। কিভাবে চলছে অবৈধ জমিদখলের পরে ফের নতুন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, তা জানেনা কেউ। একসময়ে অবৈধভাবে দখলবাজ চক্রের মূল হোতা কাজল ও পলাশ এসে দাবী করেন জমি তাদের ভাড়ায় নেয়া। এরপর তালিকায় নাম দেখার পর সংবাদ প্রকাশের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন তারা।
অথচ, নদী ও খাল দখলাজদের বিরুদ্ধে পরিবেশবাদী সংগঠন, নদী রক্ষা কমিশন ও দেশের সরকার ব্যপক সোচ্চার থাকলেও কিভাবে এই দুঃসাহসিক কাজ করে তারা প্রশ্ন স্থানীয়দের। তারা বলেন, ‘ উপজেলায় ভূমিদস্যুদের তৎপরতা খুব বৃদ্ধি পেয়েছে। এই চক্রের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের যুগান্তকারী রায়ের পরও তারা বেপরোয়া সরকারি কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে। তাদের প্রশ্রয়েই কোটি কোটি টাকার জমি অবৈধভাবে দখল করে প্রকাশ্যে টিকে আছে ভূমিদস্যুরা। একাধারে সরকারি ভূমি দখল আর নদী দূষণ চলে এখানে।’
অভিযুক্ত ও দখলদাদের তালিকাভুক্ত কাজল বলেন’ আমি জানতাম না এটা সরকারী জমি।আর আমরা বাণিজ্যিকভাবে নতুন করে যে দালানে রেস্টুরেন্ট করতেছি, সেটা অবৈধ দখল জানি।তবে সেটা আমি দখল নেইনি।ওখানে আমাদের প্রায় কোটি টাকার ইনভেস্ট করা।
নতুন করে শুরু করা অবৈধ নদী দখলবাজদের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সমন্ধে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন ‘ আগে জানতাম না নতুন করে কাজের বিষয়টি।আমি দ্রুত দেখছি বিষয়টি।ব্যবস্থা নেয়া হবে। ‘ তবে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে যোগাযোগ করা হলেও কোন উত্তর দেননি তিনি।এ রিপোর্ট করা পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহনের খবর পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ, উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী দ্রুত অবৈধভাবে দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন,অবৈধভাবে দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান এবং কোন ধরণের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। একইসাথে ঋণ পাবার অযোগ্য বলেও বিবেচিত হয়েছেন অবৈধ দখলদার সবাই।