সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১০ পূর্বাহ্ন

জেলায় জেলায় জনসভা ও সমাবেশ করবেন শেখ হাসিনা

  • প্রকাশিত : সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২২

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের চাঙা করতে জেলায় জেলায় জনসভা করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেসব জেলায় দীর্ঘ কয়েক বছর তিনি যাননি, সেসব জেলাকে প্রাধান্য দিয়ে তৈরি হচ্ছে তাঁর সফরসূচি। গত শুক্রবার বিকালে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দলীয় নেতাদের এ কথা নিজেই জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

দলীয় সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলকে এখন বেশি সময় দেবেন। সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় রেখে জেলায় জেলায় জনসভা ও সমাবেশ করবেন তিনি। জেলা পর্যায়ে সফরের পাশাপাশি দুটি করে জেলা আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতাকে গণভবনে ডেকে কথা শুনবেন তৃণমূল নেতাদের।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘আগামী ২৪ নভেম্বর যশোর, ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম ও ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে সশরীরে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়াও নড়াইলে সমাবেশ করার কথা রয়েছে।’
সূত্রমতে, নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সভা-সমাবেশ করছে বিএনপি। বিএনপি প্রথমে শুধু রাজধানীকেন্দ্রিক সভা-সমাবেশ করলেও এখন বিভাগীয় পর্যায়ে এই সমাবেশগুলো করছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ করার কথা রয়েছে। ওই সমাবেশের পরের দিন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে স্মরণকালের যুব সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ যুব সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এ সভা সফল করতে যুবলীগ জেলায় জেলায় বর্ধিত সভা করছে। শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি।

এদিকে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশের কর্মসূচি দেওয়া নিয়ে। কিন্তু এটা মানতে নারাজ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলছেন, আমরা বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করছি না। আমাদের পূর্বনির্ধারিত জেলা সম্মেলন এবং জনসভা করা হচ্ছে।

গতকাল সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনো পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করে না। বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টির কোনো বিষয় নেই। আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন এবং অন্যান্য সম্মেলন নিয়মিত প্রক্রিয়া। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের সময় মিলে গেলে আমরা কী করব?’ তিনি বলেন, ‘এখন থেকে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার বাইরে সমাবেশ করবেন। করোনার কারণে তিনি এত দিন সশরীরে যেতে পারেননি।’

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে আগামী ৪ ডিসেম্বর ১০ লাখ লোকের সমাগম ঘটাতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ওই সমাবেশ থেকে বিএনপির সমাবেশের জবাব দেওয়া হবে। দলটির নেতারা বলছেন, বিএনপিকে ঢাকা জেলা সম্মেলনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল জনস্রোত নামাবে আওয়ামী লীগ। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে মানুষের ঢল নেমেছিল সেদিন। সমাবেশ শুরুর আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় শেরেবাংলা নগরের মাঠটি। মিছিল-স্লোগানে মুখরিত হয়েছিল শেরেবাংলা নগর। ঠিক সেভাবেই চট্টগ্রামের সম্মেলন সফল করা হবে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জনগণের সঙ্গেই থাকতে চায়। সে কারণেই দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনসভায় নামছেন। ইতোমধ্যে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বিশাল সমাবেশ করে প্রমাণ করেছি জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গেই আছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিটি সমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ পাবে বলে জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনার বৈশ্বিক মহামারির কারণে জনগণের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের কাছে সরাসরি যেতে পারেননি। এখন করোনার ধাক্কা কমে এসেছে। তাই নেত্রী এখন জনগণের কাছে যেতে চান। সে কারণেই দীর্ঘদিন পর এখন থেকে তিনি জেলা সফরে তাঁর সরকারের সাফল্য এবং দেশকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেসব তুলে ধরবেন। একই সঙ্গে বিশ্ব সংকটের কারণে কী কী হচ্ছে তা জনগণের কাছে তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী।’ তিনি বলেন, চট্টগ্রামের যে জায়গায় (পলোগ্রাউন্ডে) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা ঘোষণা করেছিলেন, দীর্ঘদিন পর সেই স্থান থেকে জনসভা শুরু করবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

এস এম কামাল হোসেন বলেন, নেত্রী সব সময়ই দলমুখী। শক্তিশালী দল দেখতে চান বলেই আমাদেরকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। তাঁর সাহস, শক্তি ও অনুপ্রেরণা পেয়েছি বলেই আমি রাজশাহী বিভাগের সব জেলা এবং ৮২টি উপজেলার মধ্যে ৭৯টি উপজেলার সম্মেলন করতে সক্ষম হয়েছি।

এই বিভাগের আরও খবর